ধান চাষ

ধান চাষ: বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সংস্কৃতির মূল

বাংলাদেশের ফসল উৎপাদনের ভিত্তিতে সারা বছরকে ৩ টি মৌসুমে ভাগ করা যায়।
যথা:
১. রবি মৌসুম
২. খরিফ-১ মৌসুম
৩. খরিফ-২ মৌসুম
 রবি মৌসুমের সময়কাল ১৬ অক্টোবর থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত।
( কার্তিক থেকে ফাল্গুন )।
 খরিফ-১ মৌসুমের সময়কাল ১৬ মার্চ থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত।
( চৈত্র থেকে আষাঢ় )।
 খরিফ-২ মৌসুমের সময়কাল ১৬ জুলাই থেকে ১৫ অক্টোবর পযর্ন্ত।
( শ্রাবণ থেকে আশ্বিন )।
ধানের মৌসুম হলো ৩ টি
যথা:
১. বোরো
২. আউশ
৩. আমন
 রবি মৌসুমে চাষ করা হয় বোরো ধান।
 খরিপ- ১ মৌসুমে চাষ করা হয় আউশ ধান।
 খরিপ- ২ মৌসুমে চাষ করা হয় আমন ধান

ধান

বাংলাদেশের প্রাণ ও অর্থনীতির মূল। এটিই আমাদের প্রধান খাদ্যশস্য এবং দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। আসুন, ধান চাষ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

ধানের গুরুত্ব

  • খাদ্য নিরাপত্তা: বাংলাদেশের বিপুল জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা মেটাতে ধানের ভূমিকা অপরিহার্য।
  • অর্থনীতি: ধান চাষের সাথে জড়িত লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য এটি রোজগারের একটি প্রধান উৎস। এছাড়া, ধান উৎপাদন ও ব্যবসায় বাংলাদেশের জিডিপিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে।
  • সামাজিক গুরুত্ব: ধান চাষের সাথে বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবন ও সংস্কৃতি গভীরভাবে জড়িত।
  • রপ্তানি: উচ্চমানের ধান ও চালের রপ্তানির মাধ্যমে বাংলাদেশ বিদেশি মুদ্রা অর্জন করে।

ধানের জাত ও চাষ

বাংলাদেশে আউশ, আমন ও বোরো এই তিনটি মৌসুমে ধান চাষ করা হয়। বিভিন্ন জাতের ধানের চাষ এই তিন মৌসুমে হয়ে থাকে। উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান চাষের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

  • আউশ: বর্ষা মৌসুমের শেষে আউশ ধান চাষ হয়।
  • আমন: বর্ষার পানিতে আমন ধান চাষ করা হয়।
  • বোরো: শীতকালে খাল বিলে জমে থাকা পানি দিয়ে বোরো ধান চাষ করা হয়।

ধান চাষের উন্নত পদ্ধতি ও প্রযুক্তি

ধান চাষ

  • উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান: বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) নিয়মিত নতুন উচ্চ ফলনশীল, রোগবালাই প্রতিরোধী এবং পরিবেশ-বান্ধব ধানের জাত উদ্ভাবন করে।
  • সঠিক সার ব্যবহার: মাটি পরীক্ষার ভিত্তিতে সঠিক পরিমাণে সার ব্যবহার করে ফসলের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করা হয়।
  • জৈব সার: গোবর, কম্পোস্ট ইত্যাদি জৈব সার ব্যবহার করে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করা হয়।
  • খরা ও বন্যা ব্যবস্থাপনা: খরা ও বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব কমাতে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
  • রোগবালাই नियंत्रণ: রোগবালাই नियंत्रণের জন্য বিভিন্ন কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা হয়।
  • আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি: আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে চাষাবাদের খরচ কমানো এবং উৎপাদন বাড়ানো হয়।
  • ফসল বীমা: প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতি থেকে কৃষকদের রক্ষা করার জন্য ফসল বীমা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

ধান চাষের সমস্যা ও সমাধান

  • মাটির উর্বরতা হ্রাস: অতিরিক্ত সার ব্যবহার, জমি চাষের অনুপযুক্ত পদ্ধতি ইত্যাদির কারণে মাটির উর্বরতা হ্রাস পায়।
  • রোগবালাই: বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই ধানের ফসলকে আক্রমণ করে।
  • জলবায়ু পরিবর্তন: অতিবৃষ্টি, খরা, জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ধান চাষকে প্রভাবিত করে।
  • কীটনাশকের অপব্যবহার: কীটনাশকের অপব্যবহার পরিবেশ ও মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

এসব সমস্যার সমাধানের জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। যেমন:

  • জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ: জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করা এবং রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার কমানো।
  • রোগবালাই नियंत्रণের জন্য উন্নত পদ্ধতি ব্যবহার: রোগবালাই नियंत्रণের জন্য জৈব কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা।
  • জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় জল সংরক্ষণ, জল নিষ্কাশন ইত্যাদি ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
  • কৃষকদের প্রশিক্ষণ: কৃষকদের উন্নত চাষাবাদের পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া।

ধানের উপজাত এবং ব্যবহার

  • চাল: ধান থেকে চাল উৎপাদন করা হয়, যা আমাদের প্রধান খাদ্য।
  • চালের গুড়া: চালের গুড়া দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করা হয়।
  • চালের ভাতা: চালের ভাতা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করা হয়।
  • চালের তেল: চালের বোটা থেকে তেল উৎপাদন করা হয়।
  • চালের খৈল: চালের খৈল দিয়ে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
  • ধানের খড়: ধানের খড় দিয়ে পশুদের খাবার, ছাউনি ইত্যাদি তৈরি করা হয়।

ভবিষ্যতে ধান চাষ

  • জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় খরা সহিষ্ণু ও বন্যা সহিষ্ণু ধানের জাত উদ্ভাবন করা।
  • জৈব কৃষি: জৈব কৃষির প্রসার ঘটিয়ে পরিবেশ বান্ধব এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য উৎপাদন করা।
  • প্রযুক্তির ব্যবহার: আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে চাষাবাদকে আরও দক্ষ ও উৎপাদনশীল করা।
  • কৃষকদের সহযোগিতা: কৃষকদের সহযোগিতায় কৃষি উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা

ধানের পুষ্টিগুণ

ধান শুধু আমাদের প্রধান খাদ্য নয়, এতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ। ধানে থাকে:

  • কার্বোহাইড্রেট: শরীরের শক্তির প্রধান উৎস।
  • প্রোটিন: শরীর গঠন ও মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয়।
  • ভিটামিন: বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন যেমন ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, নিয়াসিন ইত্যাদি।
  • খনিজ পদার্থ: আয়রন, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি খনিজ পদার্থ।

ধানের প্রক্রিয়াকরণ

ধানকে খাদ্য উপযোগী করার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রক্রিয়াকরণ করা হয়। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

  • চালের খোসা ছাড়ানো: ধানের খোসা ছাড়িয়ে চাল তৈরি করা।
  • চালের মসৃণকরণ: চালকে মসৃণ করার জন্য পালিশ করা।
  • চালের শ্রেণিবিন্যাস: চালের গুণমানের ভিত্তিতে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা।

ধানের ব্যবহার

ধান ও চালের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। এগুলো দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করা হয়। যেমন:

  • ভাত: আমাদের প্রধান খাদ্য।
  • রুটি: বিভিন্ন ধরনের রুটি তৈরি করা হয়।
  • পিঠা: বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি করা হয়।
  • নুডলস: নুডলস তৈরি করা হয়।
  • বিস্কুট: বিস্কুট তৈরি করা হয়।
  • আটা: চালের আটা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করা হয়।

ধান চাষের ইতিহাস

ধান চাষের ইতিহাস খুবই পুরানো। ধারণা করা হয়, প্রায় ১০,০০০ বছর আগে চীন ও জাপানে ধান চাষ শুরু হয়েছিল। বাংলাদেশেও হাজার হাজার বছর ধরে ধান চাষ হয়ে আসছে।

ধান চাষের ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ

ধান চাষের ভবিষ্যতে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যেমন:

  • জলবায়ু পরিবর্তন: জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে খরা, বন্যা, সমুদ্রপৃষ্ঠ বৃদ্ধি ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা ধান চাষকে প্রভাবিত করবে।
  • জনসংখ্যা বৃদ্ধি: জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে খাদ্য চাহিদাও বৃদ্ধি পাবে, যার ফলে ধান উৎপাদন বাড়াতে হবে।
  • জমি সংকট: শহরায়ণের কারণে কৃষি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে, যা ধান চাষের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ।
  • রোগবালাই: নতুন ধরনের রোগবালাই ধানকে আক্রমণ করতে পারে।

ধান চাষের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

যদিও ধান চাষের সামনে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবুও ভবিষ্যতে ধান চাষের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। যেমন:

  • উন্নত জাতের ধান: উচ্চ ফলনশীল, রোগবালাই প্রতিরোধী এবং পরিবেশ-বান্ধব ধানের জাত উদ্ভাবন করা।
  • আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি: আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে চাষাবাদকে আরও দক্ষ ও উৎপাদনশীল করা।
  • জৈব কৃষি: জৈব কৃষির প্রসার ঘটিয়ে পরিবেশ বান্ধব এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য উৎপাদন করা।
  • কৃষকদের সহযোগিতা: কৃষকদের সহযোগিতায় কৃষি উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা।

আপনি কি ধান সম্পর্কে আরও কিছু জানতে চান?

  • ধানের বিভিন্ন জাত
  • ধানের রোগবালাই
  • ধান চাষের সরকারি উদ্যোগ
  • ধানের বাজার

ধানের বিভিন্ন জাত

বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ হয়, যেমন:

স্বল্প মেয়াদি আমন ধানের জাত

ব্রি ধান৭১, ব্রি ধান৭৫, ব্রি ধান৯০, ব্রি হাইব্রিড ধান৪, ব্রি ২০
হাইব্রিড ধান৬, বিনা ধান১৬, বিনা ধান১৭

মধ্যম মেয়াদি আমন ধানের জাত

ব্রি ধান৪৯. ব্রি ধান৭০, ব্রি ধান৭২ব্রি ধান৭৯, ব্রি ধান৮০, ব্রি ধান৮৭, ব্রি ধান৯৩,ধান৯৪, ব্রি ধান৯৫, ব্রি ধান১০৩

দীর্ঘ মেয়াদি আমন ধানের জাত

বিআর১১, ব্রি ধান৫১, ব্রি ধান৫২

ধানের রোগবালাই

ধানকে বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই আক্রমণ করে, যেমন:

  • ব্লাস্ট: একটি ছত্রাকজনিত রোগ যা ধানের পাতা, ডাটা এবং শীষকে আক্রমণ করে।
  • বাকানী: আরেকটি ছত্রাকজনিত রোগ যা ধানের বীজকে আক্রমণ করে।
  • গোলকীট: একটি কীট যা ধানের গোড়া কেটে ফেলে।
  • পাতা মোড়ানো কীট: একটি কীট যা ধানের পাতা মোড়িয়ে ফেলে।

ধান চাষের সরকারি উদ্যোগ

বাংলাদেশ সরকার ধান চাষের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যেমন:

  • উন্নত জাতের বীজ বিতরণ: কৃষকদের উন্নত জাতের বীজ বিতরণ করা হয়।
  • সার ও কীটনাশক সরবরাহ: সার ও কীটনাশক সহজলভ্য করার জন্য সরকারিভাবে সহায়তা করা হয়।
  • কৃষি প্রশিক্ষণ: কৃষকদের উন্নত চাষাবাদের পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
  • কৃষি ঋণ: কৃষকদের কৃষি ঋণ সহজলভ্য করা হয়।

ধানের বাজার

ধানের বাজার বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ধানের উৎপাদন, পরিবহন, সংরক্ষণ এবং বাজারজাতকরণের সাথে জড়িত অনেক মানুষের জন্য এটি রোজগারের একটি উৎস। ধানের দাম বিভিন্ন কারণে যেমন উৎপাদন খরচ, চাহিদা, সরকারি নীতি ইত্যাদির উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়।

আমন ধান আবাদে সারের পরিমাণ ও প্রয়োগ পদ্ধতি

দীর্ঘ ও মধ্যম মেয়াদি জাতের জন্য

 

(যে সকল জাতের জীবনকাল ১২০+ দিনের বেশি)

উদাহরণস্বরূপ: ব্রিধান-১০৩, ব্রিধান-৯৫, ব্রিধান-৯৪, ব্রিধান-৯৩, ব্রিধান-৮৭, ব্রিধান-৫২, ব্রিধান-৫১, ব্রিধান-৩৪, বিআর-২২, বিআর-২৩, বিআর-১১, ব্রিধান-৮০, ব্রিধান-৭০, অ্যারাইজ আইএনএইচ-১৬০১৯, ধানী গোল্ড, এজেড-৭০০৬, ব্রাক ১

বিঘা প্রতি (৩৩ শতাংশে) সারের পরিমাণ:

ইউরিয়া: ২৫ কেজি
টিএসপি/ডিএপি: ১২ কেজি
পটাশ ১৬ কেজি
জিপসাম: ১০ কেজি
ম্যাগসার: ২ কেজি
জিংক (মনো): ১ কেজি (আলাদাভাবে ২৪-৪৮ ঘণ্টা
আগে অন্য সার দেওয়া)
সার প্রয়োগ পদ্ধতি :
চারা রোপনের আগে:

টিএসপি/ডিএপি: ১২ কেজি
পটাশ : ১০ কেজি
ম্যাগসার: ২ কেজি

জিপসাম: ১০ কেজি

জিংক (মনো): ১ কেজি (জিংক সার আলাদাভাবে
১-২ দিন আগে ছিটালে ভালো হয়)
প্রথম কিস্তি : ইউরিয়া সার চারা রোপনের ১০-১২ দিনে ৯ কেজি উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
দ্বিতীয় কিস্তি : চারা রোপনের ২৫-৩০ দিনে ৯ কেজি ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
তৃতীয় কিস্তি : চারা রোপনের ৪০-৪৫ দিনের মধ্যে ৭ কেজি ইউরিয়া সারের সাথে বাকি ৬ কেজি পটাশ সার মিশিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।

(যে সকল জাতের জীবনকাল ১২০ দিনের কম)

 

উদাহরণস্বরূপ: ব্রিধান-৭৫, ব্রিধান-৭১, বিনা-১৭, ইস্পাহানি-৮, মিনিশাইল, ব্রিধান-৪৮ বিঘা

 

 

প্রতি (৩৩ শতাংশে) সারের পরিমাণ:

ইউরিয়া: ২০ কেজি
টিএসপি/ডিএপি: ৮ কেজি
পটাশ: ১৩ কেজি
ম্যাগসার: ২ কেজি
জিপসাম: ৭ কেজি

জিংক (মনো): ১.০ কেজি (আলাদাভাবে ২৪-৪৮ ঘন্টা আগে)
সার প্রয়োগ পদ্ধতি: চারা রোপনের আগে:
টিএসপি/ডিএপি: ৮ কেজি
পটাশ ৮ কেজি
ম্যাগসার: ২ কেজি
জিপসাম: ৭ কেজি
জিংক (মনো): ১ কেজি (জিংক সার আলাদাভাবে ১-২ দিন আগে প্রয়োগ করা ভালো)

প্রথম কিস্তি ইউরিয়া সার চারা রোপনের ১০-১৫ দিনে ৭ কেজি উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
দ্বিতীয় কিস্তি : চারা রোপনের ২৫-৩০ দিনে ৭ কেজি ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করতে হবে। তৃতীয় কিস্তি : চারা রোপনের ৩৫-৪০ দিনে ৬ কেজি ইউরিয়া সারের সাথে বাকি ৫ কেজি পটাশ (এমওপি) মিশিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।

বিশেষ দ্রষ্টব্য : পটাশ সার গাছ শুকনো অবস্থায় উপরি প্রয়োগ করতে হবে। চারা রোপনের ৪০-৫০ দিনের মধ্যে (জাতভেদে) ইউরিয়া সার প্রয়োগ শেষ করতে হবে। বৃষ্টির আগে ও পরে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা যাবে না। দুপুর বেলা প্রচন্ড রোদে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা যাবে না। শেষ বিকেলে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা ভালো। টিএসপি সারের পরিবর্তে ডিএপি সার প্রয়োগ করলে ৪০% ইউরিয়া সার কম প্রয়োগ করতে হবে। সারের মাত্রা অঞ্চল ও জমি ভেদে কম-বেশি হতে পারে। টিএসপি এবং জিংক কোন ভাবেই এক সাথে প্রয়োগ করা যাবে না।

উপসংহার

ধান বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সংস্কৃতির মূল। ধান চাষের উন্নয়নের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী করা এবং দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সম্ভব।

আরো পড়ুন:-লতি রাজ কচু চাষ পদ্ধতি

সোশ্যাল মিডিয়া লিঙ্ক:-https://www.facebook.com/infoseba.2024/

Leave a Comment